স্টাফ রিপোর্টার : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামী অস্ত্রবাজ সানমুন অবশেষে যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে।
পলাতক সন্ত্রাসী গডফাদার আজমির ওসমানের হোন্ডা বাহিনীর অন্যতম সদস্য এবং কিশোর গ্যাং লিডার ও হত্যাসহ চাঁদাবাজি মামলার আসামী সানমুনকে ২৭ জুলাই বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ৮নং ওয়ার্ডের গোদনাইল পুরাতন আইলপাড়া এলাকার মা মঞ্জিল থেকে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে আটক করে।
এ সময় এলাকাবাসী যৌথ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাদক কারবারী সন্ত্রাসী সানমুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করে।
জানা যায়, অস্ত্রবাজ সানমুনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা রয়েছে। মামলা নং-৭(৬)২৫ এবং ফতুল্লা মডেল থানায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে গুলি বর্ষনকারী হিসেবে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলা নং-৩৪(৮)২০২৪। এছাড়াও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এবং ডিসি এসপির কাছে মাদকের তালিকায়ও রয়েছে এই সানমুনের নাম।
দীর্ঘদিন যাবৎ আজমির ওসমানের নাম ব্যবহার করে বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে গোদনাইলে মাদকের হাট বসিয়েছিল এবং অস্ত্র বিক্রি করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যায়। অথচ তার নেই কোন আয়ের উৎস।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধোরসহ নানাভাবে হয়রানী করেছিল এই অস্ত্রবাজ সানমুন। সানমুনের পিতা আব্দুর রহমান সেন্টু এলাকায় নারী লিপ্সু হিসেবে পরিচিত এবং এলাকার মাদক বিক্রেতা ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা হিসেবে তার জুড়ি ছিলো না।
সেন্টুর বিরুদ্ধেও ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা রয়েছে। ২৭ জুলাই দুপুরে সেনা বাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ যৌথ বাহিনী সানমুনের বাড়িতে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানের সময় মাদক ও ছুরিসহ বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র তল্লাশী চালিয়ে পাওয়া গেছে বলে এলাকাবাসী জানায়।
সানমুন আটক হওয়ার সময় তার পিতা সেন্টু তাৎক্ষনিকভাবে অজ্ঞান হওয়ার অভিনয় করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। যার কারণে যৌথ বাহিনী মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে আটক করেনি। কিন্তু দুরন্ধর এই সেন্টু বিগত সময়েও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে গেলে অজ্ঞান হওয়ার নাটক করে থাকে বলে এলাকাবাসী জানায়।
যৌথ বাহিনী সানমুনকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে চলে আসার পর সেন্টু এলাকায় বীরদর্পে ঘরের বাহিরে এসে পুলিশ প্রশাসন এবং এলাকার জনসাধারণকে অস্লীল গালিগালাজ করতে থাকে।
তবে পুলিশ বলছে, সেন্টুকে যেকোন সময় গ্রেফতার করা হতে পারে। এদিকে এলাকাবাসী জানায়, সানমুন বাহিনীর অন্যতম সদস্য তার ছোট বোন জামাই স্বদেশ শিবু মার্কেট লামাপাড়া দরগা মসজিদ এলাকা থেকে আইলপাড়া এসে সংঘবদ্ধ হয়ে চুরি, ছিনতাই ও রাহাজানি করে আসছে। স্বদেশকে দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।
এছাড়াও এই বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে পলাশ, শাকিল, মেহেদী, কৌশিক, রিফাত, জয়, বাদশা, কদু, মস্তান, রাব্বিসহ আরো কয়েকজন চিহ্নিত ছিনতাইকারী এবং মাদককারবারী এলাকায় অতিষ্ঠ করে তুলেছে।
ইতিমধ্যে পুলিশ সানমুনের চাচাতো ভাই ডাকাত দলের সদস্য রাজুকে সিদ্ধিরগঞ্জ পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত একাধিক মামলার আসামী সানমুন যৌথ বাহিনীর হেফাজতে রয়েছে এবং অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন।
২৮ জুলাই সোমবার আটককৃত আসামী সানমুনকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠাতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।