• বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে আটক সোনার বারকে ঘিরে ধোঁয়াশা রাঙামাটিতে অপারেশন ডেভিলহান্টে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার রাঙামাটির বরকলে পাহাড়ি অজগরের পেটে কৃষকের আস্ত ছাগল মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ উপজেলায় জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনাল থেকে সেনানিবাসের সাবজেলে প্রেরণ নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে রাঙামাটিতে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জার্মানির নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ গাজায় ১৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ হস্তান্তর করেছে ইসরাইল : রেড ক্রস আশা করছি শিক্ষকরা নবউদ্যমে শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন : প্রধান উপদেষ্টা রাঙামাটিতে মারমা নারীকে গণধর্ষণে জড়িতদের বিচারের দাবিতে পিসিসিপি’র মানববন্ধন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
স্বাগতম আমাদের অনলাইন নিউজ পোটাল  "Sonalivor" সত্য প্রকাশে আপোষহীন....... সারা দেশ ব্যাপী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে, হটলাইন - 01833-133149

গাজীপুরের দশতলা ভবনের নকশা লঙ্ঘনের শুনানি, আদালত লঙ্ঘন স্বীকার করে তদন্ত রিপোর্ট

Reporter Name / ২২০ Time View
Update : শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪

বিশেষ প্রতিনিধি, গাজীপুর : আজ হাইকোর্টের বিজয়-৭১ ভবনের ২০ নম্বর আদালতে গাজীপুর সদর এলাকার বহুল আলোচিত দশতলা ভবন “এফকেএস মউহার” এর নকশা লঙ্ঘনের বিষয়ে রিট পিটিশন নং ১১৪/২০২৪ এর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ভবনটি “জেসমিন বিল্ডার্স” নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানী নির্মাণ করেছে। মামলাটি দায়ের করেছিলেন মনোয়ারা বেগম। তিনি অভিযোগ করেন যে ভবনটি অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করে নির্মাণ করা হয়েছে যা ভবনের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে।

শুনানিতে পিটিশনারের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক খান। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. তৌফিকুল ইসলাম খান এবং অ্যাডভোকেট হাসান মাহমুদ খান।

আদালতে এক দরখাস্ত মূলে যুক্তি উপস্থাপন করা হয় যে ভবনটির নকশা লঙ্ঘনের ফলে ভয়েডের সম্মুখ সম্পূর্ন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে বাতাস চলাচল এবং আলোর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দক্ষিনের একটি ভয়েডে প্রবেশ করতে হলে অন্য আরেকজন ফ্ল্যাট মালিকের ব্যক্তিগত অ্যাপার্টমেন্টের ভেতর দিয়ে যেতে হয় অথচ ঐ ভয়েডে মোট ৯টি রান্নাঘর আছে যা ভবনের এবং বাসিন্দাদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ করে যেকোন দুর্ঘটনা বা অগ্নিকান্ডের। এ ছাড়া ভবনটির জরুরি প্রস্থান পথ নাই এবং সিঁড়ির আকারে ব্যতিক্রমগুলোও উল্লেখ করা হয়। পূর্ব ও দক্ষিন দিকের সীমানা প্রাচীর রাস্তার উপরে প্রায়।

রাজউক কর্তৃপক্ষের দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে বেশ কিছু গুরুতর নকশা লঙ্ঘনের তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি তলায় ১৩.৭২ বর্গফুট জায়গা কমানো হয়েছে। চারটি নির্ধারিত ভয়েডের মধ্যে একটি পাওয়াই যায়নি। পূর্ব ও দক্ষিণ দিকের সীমানা প্রাচীর অনুমোদিত নকশা থেকে বেশ কয়েক মিটার বিচ্যুত। তবে পিটিশনারের দাবি, রাজউক এখন পর্যন্ত ভবনের মূল নকশা আদালতে দাখিল করেনি বরং কেবল একটি অসম্পূর্ণ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

ডেভেলপার কোম্পানীর পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী দাবি করেন, পিটিশনারের উচিত ছিল সালিশি পদ্ধতিতে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা। তিনি আরও বলেন, এই রিটের কারণে ডেভেলপারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হতে পারে। তবে পিটিশনারের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হয় যে ১৯৫২ সালের ইমারত নির্মাণ আইনের আওতায় রাজউকের দায়িত্ব রয়েছে নকশা লঙ্ঘনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের। সালিশি পদ্ধতিতে বসার কোনো আইনি সুযোগ এখানে নেই।

এর আগে ০৪/০৯/২০২৪ তারিখে হাইকোর্টের মূল-১৫ নম্বর আদালতে কন্টেম্পট মামলা নং ২০০/২০২৪ এর শুনানিতে রাজউক এবং গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (গাজউক) নিজেদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করে। উভয় পক্ষই একে অপরের উপর দায় চাপিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে বিলম্ব করে। আদালত এই বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং রাজউকের চেয়ারম্যানকে হাজির করিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে বাধ্য করে।

পিটিশনারের পক্ষে আজ শুনানির সময় উল্লেখ করা হয় যে ভবিষ্যতে এই ধরণের নির্মাণ অনিয়ম এড়াতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। শুনানির শেষে পিটিশনার মনোয়ারা বেগম এবং তাঁর আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. তৌফিকুল ইসলাম খান জানান, এই মামলার মাধ্যমে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা করি।

এই মামলা প্রসঙ্গে পিটিশনারের থেকে জানা যায় যে বিগত সরকারের প্রভাবশালী নেতাদের উপর ভর দিয়ে চলা এই জেসমিন ডেভেলপার জানুয়ারী ২০২৪ এ রিট পিটিশনের পর তড়িঘড়ি ভবনের কাজ সমাপ্ত করে জায়গার মালিক পক্ষের কাউকে না রেখে এপার্টমেন্ট কমিটি বানিয়ে তাঁর পরিবারকে হেনস্তা করার জন্য এক ফ্ল্যাট মালিককে দিয়ে তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা Sador PS Case no-29(7)24 দিয়ে জেল খাটিয়েছে। কমিটি ভাড়াটিয়াকে রুমের চাবি ও বাসা ভাড়া দিতে হবে বলে শাসিয়েছে। পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় নেতাদের ম্যনেজ করে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়া এই ডেভলপার ফাকরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম জুয়েল গংদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতারিত ব্যক্তি ভয়ে মুখ খুলতে পারেনি। সরকার পতনের পর তারাও নেতা পরিবর্তন করে প্রকাশ্যে শহরের বর্তমান প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় চলছে।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন যে তিনি গাজীপুর সদরের গুরুত্বপূর্ণ যায়গায় আমার ৩ তলা সুন্দর বাগান বাড়িটির স্থানে সুদৃশ্য ১০তলা ভবন চেয়েছিলেন। কিন্তু গায়ের জোরে পেশীশক্তি প্রদর্শন পূর্বক এই দমবন্ধ ১০তলা বাক্স পেয়েছেন যা সুস্পস্টভাবে একটি প্রতারনা তো অবশ্যই সাথে সাথে রাজউকের প্ল্যান জালিয়াতি!

তিনি আরো বলেন যে, গত ৬ বছর অমানুষিক মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। চুক্তিবদ্ধের বছরখানেক পর জায়গার মূল দলীল নেই, ফ্ল্যাট মালিকদের কাছে অবৈধভাবে গ্যাস বিক্রি এবং তিতাস কর্তৃক ১৭টি অবৈধ লাইন পাওয়ার জন্য তাদের মুচলেকা দেয়া, প্রতিটি ফ্ল্যাটে কমপক্ষে ৪০০ স্কয়ারফিট জায়গা কারচুপি, ৬৪ সালের কেনা জায়গায় অন্য মালিক বের হওয়া, অন্য ফ্ল্যাট মালিকের কাছে গ্যারেজ বিক্রিসহ ইত্যাদি একেক দিন একেক রকমের স্বেচ্ছাচারিতা ও অন্যায় করে যাওয়া এই ভূমিদস্যু ডেভেলপার যখন আমাদের সর্বশেষ চুড়ান্তভাবে জানায় যে রাজউক নয়, তাদের নকশা/প্ল্যানই মেনে নিতে হবে, তখনই তিনি এই রিট পিটিশনে যান। ন্যায় বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তিনি মামলা আব্যহত রাখবেন বলে জানান।

উল্লেখ্য, এই প্রতিবেদনে তথ্য পিটিশনার, তার আইনজীবী এবং আদালতের নথি থেকে সংগৃহীত।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

More News Of This Category

Recent Comments

No comments to show.