মো. মনোয়ার হোসেন, রাজশাহী প্রতিনিধি : গোদাগাড়ীতে আটক স্বর্ণের বারকে ঘিরে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার হাটপাড়া ঘাট এলাকায় গত ২০ অক্টোবর একটি স্বর্ণের চালান আটক করে গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশ।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চালানটি ৩ জন পুলিশ সদস্য সিভিল পোশাকে এসে বেলা আনুমানিক ৩ টার সময় ঐ ব্যক্তিকে আটক করে। আশপাশে লোকজনকে কিছু না বলেই আসামী মোশাররফকে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে মোটর সাইকেল যোগে উঠিয়ে নিয়ে যান তারা।
পরে প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা পর আসামিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ। এসময় ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মোয়াজ্জেম হোসেন, এসআই কুদ্দুস, এসআই রেজাউল, এএস আই মজনু মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে আশপাশের লোকজনকে পুলিশ ডাক দেয় এবং আসামীর কোমরের অংশ থেকে ৫ টি স্বর্ণের খণ্ডাংশ বার পেয়েছি মর্মে জানায়। এরপর ২ জনকে স্বাক্ষী করে পুলিশ আসামীকে নিয়ে চলে যান।
এদিকে পুলিশের এসআই কুদ্দুস বলেছেন, “আমরা আসামিকে আটক করেছি সাড়ে সাতটার সময়। আমরা ৩ টার সময় ঘটনাস্থলে যাইনি। যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমরা সাড়ে সাতটায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামীকে অবৈধ স্বর্ণের বারসহ আটক করেছি।
অভিযান পরিচালনার সময় আপনারা ৩ জন ছিলেন এমন প্রশ্নে কুদ্দুস বলেন, না ঘটনাস্থলে আমি, ওসি মোয়াজ্জেম, এসআই রেজাউল, এএসআই মজনু মিয়াসহ কনস্টেবলরা ছিল। আমরা একবারই ঘটনাস্থলে গিয়েছি।
উপস্থিত এএসআই মজনু ৩ টার সময় তুলে আনার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, আমরা ঐ সময় তার কাছে খুঁজে পাইনি। থানায় নিয়ে আসার পর পেয়েছি।
আপনারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামির কোমরে পাওয়ার বিষয়টি জনগনকে দেখিয়েছেন এমন প্রশ্নে মজনু দ্রুত কাজ আছে বলে সটকে পড়েন।
হাটপাড়া ঘাটের মমিন মাঝি বলছেন, ৩ জন লোক সিভিল পোশাকে এসে আসামিকে নৌকা থেকে নামিয়ে তুলে নিয়ে যায়। কাউকে কিছু বলেওনি কাউকে কোন কিছু দেখায়নি। তখন আমরা জানতাম না কি কারণে তাকে ধরে নিয়ে গেল। পরে আবার সাড়ে সাতটা সময় নিয়ে এসে যখন লোকজনকে দেখালো তখন জানতে পেরেছি। দেখলাম ৫ টি স্বর্ণের বার।
স্থানীয়রা আরও বলেন, স্বর্ণের বার আরও ছিলো। পূর্ণাঙ্গ স্বর্ণের বার থেকে খণ্ড অংশ করা হয়েছে। বড় একটা অংশ গোপন করা হয়েছে মর্মে জানান তারা।
হাটপাড়া এলাকার মুহিন ইসলাম (১৪) জানান, ৩ টার সময় ঐ লোকটাকে লিয়্যা গেছে। ফের এশারের সময় লিয়্যা আইসছে।তখুন দেখনু যে সোনা পাইয়্যাছে। হামি আর কিছু জানি না।
একই এলাকার নিতাই থানা থেকে পাওয়া ছবি দেখে বলেন, ঐ সময় এ ধরণের সোনার বার ছিল না। আরও মোটা ও লম্বা ছিল।
গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আসামীকে ৩ টার সময় গ্রেফতারের তথ্য সঠিক নয়। অভিযানে থাকা এএস আই মজনু আসামীকে ৩ টায় গ্রেফতার করেছে মর্মে স্বীকার করেছে বলে জানতে চাইলে ওসি বলেন, তিনি সঠিক জানেন না।
স্থানীয়রা আসামীকে ৩ টার সময় আটক করেছে জানালে তিনি বলেন, স্থানীয়রাও মিথ্যা বলছে। আসামীকে সন্ধ্যার পর আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তির নিকট থেকে খন্ড সোনার বার পাওয়া গেছে।