রেজাউল ইসলাম, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি : জুলাইয়ের ছাত্র, শ্রমিক, জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিজিবির গুলিতে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের টোকরাভাষা মিরপাড়া গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে, সাজু। নিহত শহীদ সাজু মিয়া’র ১ম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪ ঘটিকায় (১২ আগষ্ট) ২০২৫। মৃত্যুর ১ম শাহাদাৎ বার্ষকীতে তার কবর জিয়ারত করে সাজু মিয়ার স্মরণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদের সহযোগী সংগঠন পঞ্চগড় জেলা শ্রমিক অধিকার পরিষদ। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রমিক অধিকার পরিষদের আসাদুজ্জামান নূর আসাদের নির্দেশনায়।
শহীদ সাজুর মৃত্যুবার্ষিকীতে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চগড় জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম, পঞ্চগড় জেলা শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, গণঅধিকার পরিষদের দেবীগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক আবতাব ভূইয়া, ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব, ইসরাফিল ইসলাম, যুব অধিকার পরিষদ দেবীগঞ্জ উপজেলার সভাপতি, মাছুম ইসলামসহ পঞ্চগড় জেলা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মী বৃন্দ।
গত ২০২৪ সালের রোববার (১১ আগস্ট) রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাজু। সাজু মিয়া একদফা দাবির আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন গত ৫ আগস্ট।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের দিন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে গাজীপুরের মাওনা হতে একটি মিছিল বের হয়। সেই মিছিলে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন সাজু মিয়া। মাওনা থেকে ছাত্রজনতা মিছিলটি নিয়ে গণভবনের দিকে রওনা হয়। ওই সময় ময়মনসিংহ থেকে সাতটি পিকআপে করে বিজিবি ও পুলিশ এসে গুলি করতে থাকে। এ সময় বিজিবির গুলি দুই দফা সাজুর পিঠে লাগে। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
শহীদ সাজু চার ভাই বোনের মধ্যে সবার বড় ছিল। তিনি গাজীপুরে একটি টেক্সটাইল মিলে চাকরি করে পরিবারের চালাতেন। তিনি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের গণঅধিকার পরিষদের অঙ্গ সংগঠন শ্রমিক অধিকার পরিষদের পঞ্চগড় জেলা কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলেন।
মৃত্যুবার্ষিকীতে সাজুর বাবা বলেন, ছাত্র আন্দোলনের সেখান থেকে ৫ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছিল। ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আমি পেয়েছি বাকি টাকা আমার ছেলের বউ পেয়েছে। পরে সরকার থেকে যে সনদপত্রে ১০ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছিল সম্পূর্ণ টাকা আমার ছেলের স্ত্রী পেয়েছে। এখান থেকে আমি কোন টাকা পাইনি। যেদিন আমার ছেলে গুলি খেয়ে মেডিকেলে ভর্তি হয় সেদিনেই আমার ছেলের বউ আমাদের বাড়ি থেকে চলে গিয়েছে।
শহীদ সাজুর বাবা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ছেলের জন্য। তিনি বলেন, একটি বছর থেকে ছেলেকে দেখি না। আমার বুক ফেটে যাচ্ছে। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তার ছেলের জন্য। শহীদ সাজুর মা ছেলের কথা মনে করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে সবার কাছে ছেলের জন্য দোয়া চান।