Advertisement

আন্দোলনের মুখে তামীরুল মিল্লাত টঙ্গীতে পদত্যাগ করেছেন মাওলানা মহতাব উদ্দিন

বিশেষ প্রতিনিধি : তামীরুল মিল্লাত টঙ্গীতে মাদ্রাসা ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গীর সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মহতাব উদ্দিন।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে ছাত্রদের আন্দোলনে উত্তাল ছিল তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গী ক্যাম্পাস। ছাত্রদের একদফা এক দাবি ছিল সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মহতাব উদ্দিন এর পদত্যাগ। সময়ের পরিক্রমায় আন্দোলন আর সুদৃঢ় হতে থাকলে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মিজানুর রহমান এর নিকট পদত্যাগ পত্র জমা দেন মাওলানা মহতাব উদ্দিন। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মিজানুর রহমান তার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, মাওলানা মহতাব উদ্দিন তার চাকরীর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন। বারবার তিনি মুচলেকা দিয়ে চাকরিতে ফিরে আসলেও দুর্নীতি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারেননি। বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়নেরও অনেক চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন বিগত দিনগুলোতে। তিনি স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের সহযোগিতায় মাদ্রাসার সকল বিভাগীয় জায়গায় একক আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। তার ভয়ে শিক্ষকরা পর্যন্ত কোন কথা বলার সাহস করতেন না। তার ব্যবহার ছিল খুবই নিম্ন পর্যায়ের।

আলিম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আফজাল জানান, অসংখ্য ছাত্রের নাম সংশোধনের নামে হয়রানি করেছেন তিনি। ছাত্রদের কাছ থেকে অধিক পরিমাণে টাকা আত্মসাৎ করতেন। যেই কাজে খরচ ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা সেই কাজে অফিসে বসে তার দালালদের মাধ্যমে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা করে নেয়ার রেকর্ডও আছে তার। আমার এক বড় ভাই সাব্বির আহমেদ গত রমজানে যখন অফিসে যোগাযোগ করে, তার সার্টিফিকেটের ফ্রেশ কপি তথা চার কপি কাগজ তুলবে যার জন্য তার কাছে চাওয়া হয়েছে ৬৫০০ টাকা। সে মাদ্রাসা অফিসে খবর নিয়ে জানতে পারলো যে অফিসিয়াল খরচ সর্বোচ্চ ২৫০০ টাকা। ততক্ষণে সাব্বির আহমেদ মাদ্রাসা ভিপি মহোদয়কে বিষয়টা অবগত করা হয়। তিনি অফিসে এসে কথা বললে ৬৫০০ টাকার কাজ ৩৩০০ টাকায় সম্পূর্ণ করে দেয়ার আশ্বাস দেন। তবুও নানান অজুহাতে তাকে হয়রানি করা হয়। এভাবে মাদ্রাসার সকল অফিসিয়াল জায়গায় দিনের পর দিন কোন এক অজানা শক্তিকে পুঁজি করে দুর্নীতি করে আসছিলেন মাওলানা মহতাব উদ্দিন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের থেকে মাদ্রাসার এক সিনিয়র কামিল শ্রেণীতে পড়ুয়া আকরাম খান জানান, দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে আমি এই ক্যাম্পাসে পড়ালেখা করে আসছি। মাওলানা মহতাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে নানা সময় নানান অভিযোগ কিছু দিন পর পর উঠে আসে। দীর্ঘদিন পড়ার সুবাদে মাদ্রাসার দায়িত্বশীল সম্মানিত শিক্ষকদের সাথে মাদ্রাসার নানান বিষয়ে কথা বলার সুযোগ হয়। নাম জানাতে অনিচ্ছুক কিছু শিক্ষক আমাকে সোনালী ভোর এর প্রতিনিধিকে করেছেন এই অভিযুক্ত মাহতাব উদ্দিন মাদ্রাসার নির্মাণের কাজে লক্ষ লক্ষ টাকার কমিশন খেয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। নির্মাণ বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, হোস্টেল এবং অফিসে একক আধিপত্য বিস্তার ছাত্র এবং অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরণ করে আসছিলেন তিনি।

ফাজিল শ্রেণীতে পড়ুয়া নাহিদ হাসান জানান, বিগত স্বৈরাচারের দোসরদের সাথে গভীর সম্পর্ক রেখে মাহতাব উদ্দিন নানান অপকর্ম করে আসছেন। আমরা কিছুদিন আগে মাদ্রাসার ভিপি আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ এর এক বক্তব্যতে শুনেছি কে-বা কারা নাকি আমাদের ক্যাম্পাসের অফিসিয়াল কাগজপত্র নিয়ে দীর্ঘদিন ঝামেলা করে আসছিল। ক্যাম্পাসকে সামনের দিকে পথ চলতে বাধাগ্রস্ত করে রেখেছেন। পরবর্তীতে আমরা কিছু ছাত্র এই বিষয়ে অধিক আগ্রহ থেকে তদন্ত করতে থাকি কে এমন ক্ষতি করলো আমাদের ক্যাম্পাসের এতদিন অফিসিয়াল কাগজপত্র আটকিয়ে রেখে। আমরা এক পর্যায়ে জানতে পারি মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মহতাব উদ্দিন একক ক্ষমতার মাধ্যমে আওয়ামী স্বৈরাচার দোসরদের সাথে গভীর সম্পর্ক করে এমন কাজ করেছেন।

মাদ্রাসা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংসদ (টাকাসু)’র ভিপি আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মহতাব উদ্দিনকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকে নানান লেখালেখি করে আসছিল ছাত্র এবং অভিভাবকরা। আজ ২৩ সেপ্টেম্বর উল্লেখিত বেশ কিছু দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত তথ্য প্রমাণসহ সকাল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে একদফা এক দাবি মাওলানা মহতাব উদ্দিনের পদত্যাগ চাই। একপর্যায়ে মাওলানা মহতাব উদ্দিন সকল অভিযোগ গ্রহণ করে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ পত্র জমা দেন মাদ্রাসা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর নিকট।

কোম্পানীগঞ্জে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বহাল রাখার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

এমরান আলী, কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি : কোম্পানীগঞ্জের জালিয়ারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ-কে বহাল রাখার দাবি এলাকাবাসীর। আজ রবিবার দুপুরে এলাকার সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, জালিয়ারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অঞ্জনা দেবী দায়িত্বে কর্মরত থাকাকালে বিভিন্ন অনিয়ম, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে অসদাচরণ এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেন বলে অভিযোগ উঠে। শিক্ষিকা অঞ্জনা দেবী ২০১২ সালে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, দাতা সদস্য, স্কুলের শিক্ষকসহ ০৭ জনের বিরুদ্ধে জিডি দায়ের ও পত্রিকা কাটিং করেন। সে সময় তদন্তে জিডির অভিযোগের পক্ষে কোন সত্যতার প্রমাণ না পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানীগঞ্জ থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি খারিজ করে প্রতিবেদন দেন।তখন এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার আশংকায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস শিক্ষিকা অঞ্জনা দেবীকে ডেপুটেশনে সিলেট সদর উপজেলার মইয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দায়িত্ব দেন।

৫ বছর পর ২০১৭ সালে উক্ত শিক্ষিকার ডেপুটেশন বাতিল হলে তিনি আবারও নিজ কর্মস্থল জালিয়ারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। তখন তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সম্প্রতি তিনি জনৈক আব্দুল্লাহ আল মামুনের প্ররোচনায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন এবং নিজে পুনরায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকের দায়িত্ব নিতে উর্ধ্বতন শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফকে বহাল রাখার দাবিতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে স্মারকলিপি প্রদান শেষে উপজেলা পরিষদ মাঠে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি জাফরুল ইসলাম বাবুল, সাবেক মেম্বার শাহনুর আলী, সেবুল আহমদ, আব্দুল কদ্দুস, সাবেক ছাত্র হুজ্জাতুল ইসলাম। এ সময় এলাকাবাসীসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

পরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সরেজমিনে জালিয়ারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন ও জরুরি বৈঠক করেন এবং পরবর্তী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সহকারী শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন।

প্রশাসনিক ব্যর্থতা স্বীকার করে স্বেচ্ছায় অধ্যক্ষের পদত্যাগ ; বেতন না পেয়ে বিপাকে কাজী আজিমউদ্দিন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা

সোনালী ভোর প্রতিবেদক : গাজীপুরের কাজী আজিমউদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ মো. হারুন অর রশিদ হাওলাদার গত ২৭ আগস্ট স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। ঐদিন বিকেলে কলেজের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক, গাজীপুর বরাবরে লেখা পদত্যাগ পত্রে তিনি নিজের প্রশাসনিক ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করেছেন।

বর্তমানে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক পদে বহাল না থাকায় সভাপতি ও অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছেন কাজী আজিমউদ্দিন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীগণ।

অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, অধ্যক্ষ হারুর অর রশিদের স্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী করার সুবাদে ভিসি হারুনুর রশিদের অনুকম্পায় প্রথমে ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। পরে অধ্যক্ষ পদ শূন্য হলে সেই পদে ভারপ্রাপ্ত থাকাবস্থায় প্রসেসিং করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক সিনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত না দিয়ে নিজের পছন্দের শিক্ষককে বসিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করে অধ্যক্ষ পদ ভাগিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ, শিক্ষক গ্রুপিং তৈরি, ফেইসবুক প্রোফাইলে আওয়ামী দলীয়করণের ছবি, ছাত্রদের ব্যবহার করে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করা, বিভিন্ন পরীক্ষার সময় অন্য কলেজ থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে দূর্ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে দূর্নীতি দমন কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে। নিয়োগ বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাৎ করে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়াসহ মোট আঠারোটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করছে দূদক কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি।

ভাওয়াল বদরে আলম সরকারী কলেজের অধ্যক্ষকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে রিপোর্ট পেশ করেছেন। তবে শুধু সম্পদের তথ্য বিষয়ক আরো বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করার জন্য ডিজি অফিস আরেকটি চিঠি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যক্ষ বিএম আব্দুল হান্নান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের কলেজ থেকে প্রাপ্ত বেতন দেয়া বন্ধ করে দেন তিনি। ফলে এমপিওহীন শিক্ষক কর্মচারীগণ গত দুই মাস যাবৎ বেতন না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। নতুন জেলা প্রশাসক যোগদান করার সাথে সাথে এর একটা সুষ্ঠু সমাধান চান শিক্ষক কর্মচারীগণ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার পর ছাত্রলীগ দিয়ে এই আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করার অভিযোগও রয়েছে অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ এর বিরুদ্ধে। গত ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পদত্যাগে বাধ্য হন বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ।

তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। অভিযোগকারীর নাম ও মোবাইল নাম্বারের কোনো অস্তিত্ব নেই। তিনি নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেন।”

টঙ্গীতে সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যা নিকেতনের অধ্যক্ষ ওয়াদুদ রহমান বহিরাগত ছাত্রদের অযৌক্তিক দাবির মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন!

টংগী থেকে এম আমজাদ খান : বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের নাম ভাঙ্গিয়ে নামধারী কথিত ছাত্রদের অযৌক্তিক দাবির মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন গাজীপুরের টঙ্গীর স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ মো. ওয়াদুদুর রহমান।

গত কয়েকদিন যাবৎ বহিরাগত কতিপয় কথিত ছাত্র ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমানের পদত্যাগের অযৌক্তিক দাবি তোলে। এসময় তারা অধ্যক্ষের অফিস রুমের সামনে বাধানো অধ্যক্ষের ন্যামপ্লেট ভেঙে ফেলে।

গত সোমবার পুনরায় ওইসব নামধারী ছাত্ররা ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে অযৌক্তিক পদত্যাগের দাবিসহ উগ্র পন্থায় আচরণ করলে বাধ্য হয়ে সাদা কাগজে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি বরাবর একটি পদত্যাগের আবেদন পত্র লিখে দেন অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমান।

আবেদন পত্র এখন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গভর্নিং বডির সভাপতি রিসিভ করেনি বলে জানা যায়। এসময় স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা ওইসব নামধারী ছাত্রদের কাছে তাদের দাবির ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা কোন যৌক্তিক দাবি ও কাগজপত্র দেখাতে পারেনি এবং কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। বরং উল্টো গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

এ ব্যাপারে শিক্ষকগণ ও অভিভাবকগণেরা ক্ষোভের সাথে বলেন, নোংরা রাজনীতির শিকার হলেন অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমান। তিনি একজন সুদক্ষ, যোগ্য ও প্রতিভাবান শিক্ষক। তার সুদক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার কারণে তিনি দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা থেকে পুরস্কৃত হয়েছেন। তিনি গাজীপুরে স্কাউট এসোসিয়েশনে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার নেতৃত্বে স্কাউট ছাত্র ছাত্রীরা অনেক দক্ষতা অর্জন করেছে। তার অগ্রণী ভূমিকায় আজ সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজের পড়ালেখার মান উন্নতি হয়েছে।

এছাড়াও এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অগ্রগতির জন্য তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। এসময় তারা আরও বলেন, নোংরা রাজনৈতিক কিছু ব্যক্তির নির্দেশে এইসব বহিরাগত নামধারী ছাত্ররা কয়েকদিন যাবৎ ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগের অযৌক্তিক দাবি তোলে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র+ছাত্রীসহ অভিভাবকরা।

পাটগ্রাম থানা-পুলিশের কার্যক্রম শুরু

এফ আই রানা, লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরবর্তী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের চলমান পরিস্থিতিতে টানা সাতদিন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানা-পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর আবারও কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকাল থেকে থানার এই কার্যক্রম শুরু হয় বলে নিশ্চিত করেন পাটগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ, আবু সাঈদ চৌধুরী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পাটগ্রাম উপজেলা নিবার্হী অফিসার নুরুল ইসলাম এর সহযোগিতায় পাটগ্রাম থানা পুলিশ ইউনিফর্ম পরে গাড়ী নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ও সড়কে টহল দিতে দেখা গেছে।

পাটগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, থানার স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। সেবা প্রার্থীদের জিডি, অভিযোগ যথারীতি গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

এছাড়াও আমি আমার অফিসার ফোর্সসঙ্গীসহ আমরা সম্মিলিতভাবে এককভাবে কাজ শুরু করেছি এবং আগামীর যে দিনগুলো রয়েছে সেগুলো তো আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাব।

রাঙামাটিতে এসপি’র নেতৃত্বে কাজে যোগ দিয়েছে পুলিশ সদস্যরা

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি : সারাদেশে বিক্ষুব্ধ মানুষের জনরোষে পড়ে ব্যাপক হামলা-খুনের ঘটনায় নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ১১ দফা দাবি জানিয়ে টানা কর্মবিরতিতে থাকা রাঙামাটির কয়েক হাজার পুলিশ সদস্য সরকারের আশ্বাসে কাজে যোগ দিয়েছে।

সোমবার দুপুরে রাঙামাটি শহরের বনরূপা পুলিশ বক্সে রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, বিপিএম (বার) এর নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজে যোগদান করে পুলিশ সদস্যরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুধু রাঙামাটি কোতয়ালী থানা নয়। রাঙামাটি উপজেলার ১২টি থানায় এক যোগে কাজে যোগদান করেন পুলিশ কর্মকর্তা কর্মচারীরা। দীর্ঘদিন পর পুলিশ ফাঁড়িতে ফিরে আসে কর্মব্যস্ততা। সচল হয় থানার কার্যক্রম।
পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ জানান, জনগণকে সাথে নিয়ে কাজ করবে পুলিশ বাহিনী। পাহাড়ি এ অঞ্চলে সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় পুলিশ সবসময় প্রস্তুত ছিল। রাঙামাটি জেলায় শান্তিপূর্ণ আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে পুলিশকে সহযোগিতা করার আহবান জানান তিনি।

গাজীপুরে ব্রি’র মহাপরিচালকের স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন

অধ্যাপক আবুল হোসেন চৌধুরী : বাংলাদেশ ধানগবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)-এর মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মো. শাহজাহান কবীর স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেছেন।

আজ ১০ আগস্ট (বুধবার) তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণের জন্য আবেদন করেছেন।

ব্রি সূত্রে জানা যায়, তিনি ১৯৯৪ সালে এই প্রতিষ্ঠানে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরিতে যোগ দেন। পরে ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট একই প্রতিষ্ঠানে ডিজি পদে দায়িত্ব পান। সর্বশেষ তিনি ওই পদে ডিজি পদেই টানা সাত বছর চাকুরি করে আসছিলেন।

একান্ত ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ৮আগস্ট তিনি একান্ত ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন করেন।
এ পদে যোগদানের আগে তিনি এ প্রশাসন ও সাধারণ পরিষদ হিসেবে ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৮৭ সালে অনার্সসহ তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে অনার্সসহ বিএসসি, ১৯৮৮ সালে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন।

তিনি ১৯৬৬ সালে নেত্রকোণা জেলার দিগলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক। ডিজিকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।